প্রতিবছর ৩১ অক্টোবর জাতিসংঘের উদ্যোগে পালন করা হয় বিশ্ব শহর দিবস। ২০১৪ সাল থেকে প্রতিবছর এই দিনে দিবসটি পালন করা হয়। বিশ্ব শহর দিবসের সাধারণ থিম হল বেটার সিটি, বেটার লাইফ। প্রতি বছর ভিন্ন উপ-থিম কে কেন্দ্র করে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এবারের প্রতিপাদ্য "শহুরে জলবায়ু এবং স্থানীয় সমস্যা মোকাবিলায় যুব নেতৃত্ব"। প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে দিবসটি পালিত হয়। সভা-সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে নগরের বিভিন্ন সমস্যা-সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব শহর দিবস পালনের উদ্দেশ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে "Future Cities 1.0" একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। গত ৩১ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ রোজ বৃহস্পতিবার বিভাগের প্রফেসর নজরুল ইসলাম আরবান স্টুডিওর পক্ষ থেকে বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা উক্ত অনুষ্ঠান আয়োজন করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিভাগীয় শিক্ষক এবং ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে বেলুন উড়িয়ে এবং বৃক্ষরোপন কর্মসূচির মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করা হয়। এছাড়াও এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়টিকে লক্ষ্য রেখে পোষ্টার প্রেজেনটেশন এবং কুইজ কম্পিটিশনে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায় সম্পূর্ণ হয়। অনুষ্ঠানের তৃতীয় পর্যায়ে ছিল প্যানেল ডিসকাশন। যেখানে উপস্হিত ছিলেন অনুষ্ঠানের মডারেটর ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. মো. মাকসুদুর রহমান, ইমিরিটাস প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রামের সাবেক প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এবং বর্তমানে রেজা কায়সার ক্লাইমেট স্কুলের সভাপতি এ কে এম রেজাউল করিম, আরো উপস্হিত ছিলেন বিধান চন্দ্র পাল, ফাউন্ডার এন্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর, প্রভা অরোরা এবং বিভাগের অন্যান্য শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ।
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে আয়োজিত সেমিনারটিতে শহরায়ন এবং ডিসেন্ট্রালাইজেশন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। চট্টগ্রামের সাবেক প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এ কে এম রেজাউল করিম বলেন, দ্রুত নগরায়নের ফলে ঢাকায় যানজট, জলাবদ্ধতা, পরিবেশ, পানি, শিল্প ও শব্দদূষণ বাড়ছে। সবুজায়ন হ্রাস পাওয়ায় নগরে তাপমাত্রা বাড়ছে। ফলে সংক্রামক-অসংক্রামক সব ধরনের রোগ দিন দিন বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে নগর জীবনের চাপ, উদ্বেগ প্রভৃতির সামষ্টিক প্রভাবে মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি। একটি বাসযোগ্য নগর ও জনবসতি গড়তে জনস্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে শহরের পরিকল্পনা করতে হবে। বিধান চন্দ্র পাল বলেন, মানবসভ্যতা দিন দিন আরও বেশি করে শহরকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। এখন বিশ্বের সব জায়গায় মানুষই চায় শহরে থাকতে। এ কারণেই শহরের জনসংখ্যা বাড়ছে দিন দিন। কিন্তু যেসব সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার জন্য মানুষ শহরে আসছে, সেই সুযোগ সুবিধাগুলোও বজায় রাখতে হবে।এছাড়াও তিনি বলেন শহর থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য গুলো কিভাবে প্রান্তিক অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া যায়, কিভাবে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা যায় ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরা হয়েছিল।
সেমিনারটি প্রাণবন্ত আলোচনা, জ্ঞান বিনিময় এবং নেটওয়ার্কিংয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করেছে। বিভাগের সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলী ও ছাত্র-ছাত্রীদের স্বতঃস্ফূর্ত অবদানের মাধ্যমে দিবসটি সফলভাবে উৎযাপিত হয়েছে।
বিজয়ী শিক্ষার্থীদের সাথে অতিথিবৃন্দ ও ফ্যাকাল্টি