ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর নিরীহ ও নিরস্ত্র বুদ্ধিজীবীদের ওপর পাকিস্তানী বাহিনী ও তার দোসরদের বর্বর আক্রমনের চিত্র তুলে ধরে বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করে সেদিন যারা নির্মম গণহত্যায় শামিল হয়েছিল, স্বাধীন বাংলাদেশে তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সভায় প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযোদ্ধা প্রাতিষ্ঠানিক ইউনিট কমান্ডের আহŸায়ক অধ্যাপক ড. মো: আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ পরিবার সমিতির সভাপতি আবু মুসা ম. মাসুদউজ্জামানসহ বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ, অফিসার্স এসোসিয়েশন, ৩য় শ্রেণী কর্মচারী সমিতি, কারিগরী কর্মচারী সমিতি এবং ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো: এনামউজ্জামান অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ’৭১-এর মানবতাবিরোধী অপরাধ ও শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম দ্রæত সম্পন্ন করার আহŸান জানিয়ে বলেন, বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতে পাকিস্তানী বাহিনী ও তার দোসররা পরিকল্পিতভাবে দেশের কৃতী সন্তানদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। মঈনুদ্দিন, আশরাফসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু বিশ্বাসঘাতক ছাত্র তাদের এই নৃশংস কর্মকাÐে সহযোগিতা করেছিল। তাদের এই অপকর্ম মানবসভ্যতাকে ধ্বংস করার শামিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফাঁসির দন্ডাদেশ প্রাপ্ত পলাতক যুদ্ধাপরাধীদের অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় দ্রæত কার্যকর করতে হবে। তিনি বলেন, জেনারেল জিয়াউর রহমান সামরিক ফরমান জারি করে যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির ব্যবস্থা করেছিলেন। ’৭১-এর গণহত্যা, ’৭৫-এর বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা এবং ২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলা একই সূত্রে গাঁথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘাতক চক্র এখনও সক্রিয় রয়েছে। এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে।
উল্লেখ্য, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিস্তারিত কর্মসূচী গ্রহণ করে। কর্মসূচীর মধ্যে ছিল - উপাচার্য ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জমায়েত, বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থান, জগন্নাথ হল স্মৃতিসৌধ ও বিভিন্ন আবাসিক এলাকার স্মৃতিসৌধে পু®পস্তবক অর্পণ, মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পু®পস্তবক অর্পণ, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে আলোচনা সভা প্রভৃতি। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদসহ বিভিন্ন হল মসজিদ ও উপাসনালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়।
----------------
(মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম)
উপ-পরিচালক
জনসংযোগ দফতর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬ বুধবার ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। (ছবি: ঢাবি জনসংযোগ)