অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ দ্বিতীয় মেয়াদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) হিসেবে চার বছরের জন্য নিয়োগ পেয়েছেন। গতকাল ১২ই এপ্রিল ২০২২ বুধবার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়। আগামী ২৭শে মে ২০২২ প্রথম মেয়াদ শেষে তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের কার্যকাল শুরু হবে।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদকে দ্বিতীয় মেয়াদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দেয়ায় তিনি বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মোঃ আবদুল হামিদ এবং বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২৮শে মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) হিসেবে যোগদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের উইনোনা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে তিনি ২০০৫ এবং ২০০৯-এ পাঠদান করে খ্যাতি অর্জন করেন। ২০০৯ সালে সমাজকর্ম শিক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ওয়াশিংটনস্থ সিএসডবিউই পরিচালিত ‘ক্যাথেরিন ক্যান্ডাল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যাল ওয়ার্ক এডুকেশন’-এর ফেলো হিসেবে বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্মের উচ্চশিক্ষার তুলনামূলক বিষয়ে গবেষণা করেন। গবেষণা ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন টোকিওর ‘জাপান কলেজ অব সোশ্যাল ওয়ার্ক’-এ। এছাড়া, তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস (ইউআইটিএস)’-এর উপাচার্য হিসেবে দক্ষতা ও সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রথিতযশা কবি ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদের জন্ম তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার জামালপুরে, ১৯৫৬ সালে।
গবেষণা, কবিতা ও অনুবাদ মিলিয়ে দেশে-বিদেশে প্রকাশিত ড. মুহাম্মদ সামাদের গ্রন্থসংখ্যা ৩০টি। এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে তাঁর অর্ধশত গবেষণা-প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য গদ্য ও গবেষণাগ্রন্থ : মুজিব আমার স্বাধীনতার অমর কাব্যের কবি; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিয়ে নির্বাচিত প্রবন্ধ (সম্পাদনা); আমার কবিতা ভ্রমণ ও অন্যান্য; বাংলাদেশে গ্রামীণ দারিদ্রমোচনে এনজিওর ভূমিকা; হৃদয়ে শেখ মুজিব (যৌথ সম্পাদনা); Social Service Activities of Religious Institutions in Bangladesh; Participation of the Rural Poor in Government and NGO Programs; এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত The Invisible People : Poverty and Resiliency in the Dhaka Slums (Jointly) প্রভৃতি।
উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ: নির্বাচিত কবিতা; আমি তোমাদের কবি; আমার দুচোখ জলে ভরে যায়; আজ শরতের আকাশে পূর্ণিমা; চলো, তুমুল বৃষ্টিতে ভিজি; পোড়াবে চন্দন কাঠ; আমি নই ইন্দ্রজিৎ মেঘের আড়ালে; একজন রাজনৈতিক নেতার মেনিফেস্টো। তাঁর কবিতা ইংরেজি, চীনা, রুশ, স্প্যানিশ, সুইডিশ, ইতালিয়ান, গ্রিক, সার্বিয়ান, হিন্দি, সিনহালি প্রভৃতি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
অনূদিত কাব্যগ্রন্থ: সাত দেশের কবিতা (সিটি আনন্দ-আলো পুরস্কারপ্রাপ্ত) ও টমাস ট্রান্সট্রয়মারের কবিতা (যৌথ)।
মুহাম্মদ সামাদ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং চীনের সাহিত্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘ইন্টারন্যাশনাল পোয়েট্রি ট্রান্সলেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার (আইপিটিআরসি)’ ও ‘গ্রিক একাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড লেটারস’ কর্তৃক ঘোষিত বিশ্বের ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রাইজেস ২০১৮: ইন্টারন্যাশনাল বেস্ট পোয়েট লাভ করেন। এছাড়া সিটি আনন্দ-আলো পুরস্কার, কবিতালাপ পুরস্কার, পশ্চিমবঙ্গের কবি বিষু দে পুরস্কার ও প্রথম অলো পুরস্কারসহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
একজন সমাজ-গবেষক, ধীমান শিক্ষাবিদ ও বাংলা ভাষার বিশিষ্ট কবি হিসেবে ড. মুহাম্মদ সামাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, ইতালি, ভ্যাটিক্যান সিটি, গ্রিস, তুরস্ক, সুইডেন, নরওয়ে, ডেনমার্ক, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম সফর করেন।
(মাহমুদ আলম)
পরিচালক
জনসংযোগ দফতর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়