উৎসবমুখর পরিবেশে মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে আতশবাজিসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। গতকাল ১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র এলাকায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে আতশবাজি ফোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ¯েøাগান-৭১। এ সময় টিএসসি প্রাঙ্গণে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের শপথবাক্য পাঠ করান উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে উপাচার্য ভবনসহ প্রধান প্রধান ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৬টা ৩০মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জমায়েত এবং সকাল ৬টা ৩৫মিনিটে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন। অনুষ্ঠিত হয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ছায়ানটের উদ্যোগে বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও সংঘীতানুষ্ঠান। বিকাল ৩টা ৫০মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে জাতীয় সংগীত গাইতে গাইতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। আয়োজনে অংশ নেয় ছায়ানট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগসহ দেশের প্রায় ৪হাজার নবীন-প্রবীণ শিল্পী।
এর আগে মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির উদ্যোগে গত ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি প্রাঙ্গণে এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে। এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ-এর ৩-দিনব্যাপী আয়োজনের মধ্যে ছিল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যদের স্মৃতিচারণ, ফানুস উড্ডয়ন ও উন্মুক্ত চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। গত ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি প্রাঙ্গণে উন্মুক্ত চলচ্চিত্র প্রদর্শনী এবং সন্ধ্যা ৭টায় ফানুস উড্ডয়ন কর্মসূচী পালিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উপাচার্য কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন ।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত বিজয় উৎসবে ‘সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও দুর্নীতির সঙ্গে কোন আপোস নয়’ ¯েøাগানে অংশগ্রহণ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। এসময় উপাচার্য বলেন, এত তথ্যপ্রমাণ থাকা সত্তে¡ও এদেশে যুদ্ধাপরাধ হয়নি মর্মে পাকিস্তান যে মন্তব্য করেছে তা নির্লজ্জ মিথ্যাচার। এই মিথ্যাচারের কথা শুনে চুপ থাকলে তা হবে মিথ্যাকে প্রশ্রয় দেওয়ার নামান্তর। একাত্তরের গণহত্যাকারী পাকিস্তান ও সন্ত্রাসী রাষ্ট্র পাকিস্তানের কোনো পার্থক্য নেই। পাকিস্তানের পার্লামেন্ট বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মিথ্যা বক্তব্য শুনে চুপ থাকা যায় না। তাই তাদের সঙ্গে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম ছিন্ন করেছে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়। একাত্তরের অপরাধের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত এ সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে না।
সন্ধ্যা ৬টা ৩০মিনিটে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় হলসমূহে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের চিত্র প্রদর্শনী, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। বিশ^বিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের উদ্যোগে বিকেলে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। বিশ^বিদ্যালয়ের উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এছাড়া, বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদসহ বিভিন্ন হল মসজিদ ও উপাসনালয়ে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য দোয়া করা হয়।
---------------
পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত)
জনসংযোগ দফতর
ঢাকা বিম্ববিদ্যালয়