ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দর্শন বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র এবং বিশিষ্ট সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও কণ্ঠশিল্পী খোন্দকার নূরুল আলম-এর মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোকবাণীতে উপাচার্য বলেন, একুশে পদক ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত খোন্দকার নূরুল আলম উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের সঙ্গে লোকসঙ্গীতের সুন্দর সম্মিলন ঘটিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গীতে এক নতুনধারা তৈরি করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের ডিগ্রীপ্রাপ্ত ছাত্র হয়েও তিনি ভালোবেসেছিলেন সঙ্গীতকে। তাঁর জীবনাচার থেকে এ প্রজন্মের অনেক কিছু শেখার আছে। তাঁর মৃত্যুতে সঙ্গীতাঙ্গনে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা পূরণ হবার নয়। উপাচার্য খোন্দকার নূরুল আলমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাঁর পরিবারের শোক-সন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
খোন্দকার নূরুল আলমের জন্ম ১৯৩৬ সালের ১৭ আগস্ট ভারতের অসম রাজ্যের গোয়ালপাড়া জেলার ধুবড়ী মহকুমায়। তিনি ১৯৫৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দর্শন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে ১৯৫৯ সালে বেতারের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। ১৯৬০ সালে তিনি ‘হিজ মাস্টারস ভয়েস’ গ্রামোফোন কোম্পানির সঙ্গে সুরকার হিসেবে যোগদান করেন। বিটিভির জন্মলগ্ন থেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। সঙ্গীতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কার, চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি পুরস্কার, শহীদ আলতাফ মাহমুদ স্মৃতি পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হন খোন্দকার নূরুল আলম। গান লেখা এবং বিভিন্ন সময় করা গানের স্বরলিপি ও স্টাফ নোটেশন স্থায়ীভাবে বাংলাদেশে সংগীত চর্চায় তাঁর স্বাক্ষর স্মরণীয় হয়ে থাকবে। অসংখ্য কালজয়ী চলচ্চিত্রে রয়েছে তার সুর করা ও গাওয়া গান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ‘সংগ্রাম’, ‘জলছবি’, ‘দেবদাস’, ‘চন্দ্রনাথ’, ‘শুভদা’, ‘বিরাজ বৌ’, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’ প্রভৃতি।
উল্লেখ্য, খোন্দকার নূরুল আলম রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২২ জানুয়ারি ২০১৬ শুক্রবার অপরাহ্নে ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
----------------
পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত)
জনসংযোগ দফতর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়