প্রবীণ প্রতœতত্ত¡বিদ, পুঁথিসাহিত্যবিশারদ ও অনুবাদক আ ক ম যাকারিয়া-এর মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। আজ ২৪ ফেব্রæয়ারি ২০১৬ বুধবার এক শোকবাণীতে উপাচার্য বলেন, ইতিহাস ও প্রতœতত্তে¡র জন্য তিনি যে অবদান রেখে গেছেন তা অনন্য-অসাধারণ। বাংলাদেশের প্রতœসম্পদের সুরক্ষা ও পরিচর্যায় তিনি বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। শুধু প্রতœতত্ত¡ চর্চা নয়, অনুবাদ সাহিত্যেও অপরিসীম অবদান রয়েছে তাঁর। পাশাপাশি পুঁথিসাহিত্য নিয়ে তাঁর পুঁথিপাঠ ও এর ব্যবহারিক চর্চা আমাদের লোকসাহিত্য জগতকে সমৃদ্ধ করেছে। উপাচার্য আরও বলেন, আ ক ম যাকারিয়ার বয়স ৯৮ বছরের উর্ধ্বে হলেও আমরা মনে করি তাঁর এই মৃত্যু এক অকাল মৃত্যু। কারণ কিছু কিছু মানুষ আছেন যাঁরা দেশ, সমাজ, রাষ্ট্রের জ্ঞান-ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তারুণ্যের উদ্দীপনা সৃষ্টি করেন, তিনি ছিলেন এ ধরনের সৃষ্টিশীল ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ। আ ক ম যাকারিয়া সারাজীবন কাজ করে গেছেন। তিনি এই বয়সেও অব্যাহত রেখেছিলেন তাঁর অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বিনিময়ের চর্চা। উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ঢাকা স্থাপত্য বিষয়ক গ্রন্থ প্রণয়ন কমিটি’র সদস্য হিসেবে আ ক ম যাকারিয়া তাঁর কর্মস্পৃহার মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করেছেন, উৎসাহিত করেছেন, সর্বোপরি সক্রিয়ভাবে এ কাজে অংশ নিয়েছেন। তরুণ শিক্ষক ও নবীন গবেষকদের প্রতœতত্ত¡ বিষয়ে কাজ করতে হলে তাঁর শরণাপন্ন হওয়া ছিল অপরিহার্য। অপরিহার্য এই মানুষটিকে হারিয়ে জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হলো।
উপাচার্য আ ক ম যাকারিয়ার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাঁর পরিবারের শোক-সন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
আ ক ম যাকারিয়া শিক্ষকতা দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে। সিভিল সার্ভিসে যোগ দেওয়ার পর ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সম্পর্কে পড়াশোনা করতে যান সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি সংস্কৃতি সচিব হিসেবে চাকুরিজীবন সমাপ্ত করে ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে অবসর গ্রহণ করেন।
তিনি অর্জন করেছেন অস্যংখ্য পুরস্কার। বাংলা একাডেমি, ইতিহাস পরিষদ ও ইতিহাস একাডেমি পদক, এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ কর্তৃক ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার গোল্ড মেডেল’, সর্বশেষ ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে লাভ করেন একুশে পদক।
উল্লেখ্য, আ ক ম যাকারিয়া রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ইন্তেকাল করেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর ৫ মাস। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে, ৩ মেয়ে, আত্মীয়-স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
----------------
পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত)
জনসংযোগ দফতর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়