১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার চক্রান্ত উদঘাটনে এবং ষড়যন্ত্রকারীদেরকে চিহ্নিত করতে একটি কমিশন গঠন করার আহŸান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। আজ ১ আগস্ট ২০১৬ সোমবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নাজমুল করিম স্টাডি সেন্টারের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় আর সি মজুমদার আর্টস মিলনায়তনে “বাংলাদেশের রাজনীতি: না জানা কিছু কথা” শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নাজমুল করিম স্মারক বক্তৃতা প্রদান করেন লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ। মূল আলোচনায় মহিউদ্দিন আহমদ বিভিন্ন সাক্ষাৎকার এবং স্মৃতিচারণ থেকে ১৯৭৩ সালের পর থেকে ২০১৪ পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতির নানা ঘটনার নেপথ্যের অনেক অজানা তথ্য তাঁর লিখিত বক্তৃতায় উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় ও সিভিল সোসাইটির প্রাতিষ্ঠানিক দূর্বলতার সুযোগে বিদেশী বিভিন্ন গোষ্ঠী, সংস্থা কিংবা রাষ্ট্র রাজনীতির ময়দানে প্রভাব বিস্তার করে। রাষ্ট্রীয় পট পরিবর্তনে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ পায়।
উপাচার্য তাঁর বক্তৃতায় আজ আগস্ট মাসের শুরুতে স্মরণ করেন ১৫ আগস্টে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনা, শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন তাঁদের প্রতি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ঘটনা কেবলমাত্র হত্যাকান্ড নয়, তা জাতিগত অস্তিত্বের সাথে জড়িত। তাই এ ঘটনাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। অনেক তথ্য আজও অজানা, অনেক তথ্য আজও অনেকের স্মৃতিতে রয়েছে। সেই সব তথ্য উদঘাটন করে ষড়যন্ত্রের সাথে যারা জড়িত ছিল তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। সে বিশ্বাসঘাতকদের মুখোশ উন্মোচন করে তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সকলকে সম্মিলিত প্রয়াস নিতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করে জনগণের সামনে কমিশনের রিপোর্ট উপস্থাপন করতে হবে বলে উল্লেখ করেন।
উপাচার্য আরও বলেন, জনগণ তথা জাতি জানতে চায় তাদের জাতির পিতাকে কেন হত্যা করা হয়েছে। ’৭৫-এর পনেরো আগস্টের নেপথ্যে ছিল হঠকারী রাজনৈতিক নেতৃত্ব- তাদেরই কর্মকাÐে তৈরি হয়েছিল বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পটভূমি। সত্য উদঘাটন করার মাধ্যমে কমিশন প্রদত্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হলে তা ইতিহাসের অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ সত্য অন্বেষণ করা। এ ধরণের একাডেমিক আলোচনার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সত্য অনুসন্ধানের কাজ অব্যাহত থাকবে বলে উপাচার্য আশ্বাস প্রদান করেন।
উপাচার্য তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজকের সহিংসতা এবং জঙ্গিবাদকে তারুণ্যের শক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করতে হবে, প্রতিহত করতে হবে। এর সাথে তোমাদের আগামীর স্বপ্ন জড়িত, তোমরাই নেতৃত্ব দেবে দেশকে , সমাজকে। তাই তোমাদের শক্তি দিয়ে জাতিকে কন্টকমুক্ত করতে হবে, জঙ্গিমুক্ত করতে হবে দেশকে।
উপাচার্য বক্তাকে ধন্যবাদ জানান, নাজমুল করিম স্টাডি সেন্টারের এ ধরণের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কেন্দ্রের পরিচালককেও ধন্যবাদ জানান। নাজমুল করিমের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
--------------
পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত)
জনসংযোগ দফতর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক আজ ১ আগস্ট ২০১৬ সোমবার সকালে নাজমুল করিম স্টাডি সেন্টারের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় আর সি মজুমদার আর্টস মিলনায়তনে “বাংলাদেশের রাজনীতি: না জানা কিছু কথা” শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য প্রদান করেন। (ছবি: ঢাবি জনসংযোগ দফতর)