ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপকভিত্তিক সাংস্কৃতিক কর্মসূচীর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক উৎসব”। বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠেয় সাংস্কৃতিক উৎসব উপলক্ষে আজ ৪ নভেম্বর ২০১৬ শুক্রবার সকালে আবদুল মতিন চৌধুরী মাল্টিমিডিয়া কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উৎসব আয়োজনের প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আক্তারী মমতাজ। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, সংগীত বিভাগের চেয়ারপার্সন ড. মহসিনা আক্তার খানম, থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান সুদীপ চক্রবর্তী এবং মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. ফাইজুর রহমান ফারুকী।
উপাচার্য বলেন, শিক্ষা ও সংস্কৃতি ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। সাংস্কৃতিক অঙ্গন সমৃদ্ধশালী হলে মুক্তচিন্তার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। সুস্থ চিন্তা, সহনশীল সমাজ এবং সুরুচিসম্পন্ন মানুষ তৈরী করতে হলে ছাত্র ও শিক্ষকের যুগপৎ সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণীভিত্তিক, হল ভিত্তিক সাংস্কৃতিক কর্মকাÐকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীকে সাংস্কৃতিক কর্মকাÐের সাথে যুক্ত করা হবে। ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে সংস্কৃতি মনস্ক হয়ে উঠতে পারে সেজন্যে এই কর্মকাÐ চলবে। তিনি বলেন, সংস্কৃতিমনস্ক মানুষই পরিপূর্ণ মানুষ তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পৃক্ততার মধ্য দিয়ে সংস্কৃতিমনস্ক মানুষ তৈরি করার পদক্ষেপই হলো এই উদ্যোগ। তাই প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিকল্পনায় বাংলাদেশের সংস্কৃতির বিষয়টিকে বিবেচনায় রাখতে হবে। বাংলাদেশের সংস্কৃতি অত্যন্ত উন্নত সংস্কৃতি। ১৯৭১’এ মুক্তিযুদ্ধের সাথে যুক্ত ছিল সাংস্কৃতিক চেতনা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাÐের সংযোগ। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র উদ্বুদ্ধ করেছে মানুষকে, মুক্তিযোদ্ধাদেরকে যুগিয়েছে অনুপ্রেরণা। উপাচার্য জর্জ হ্যারিসনের বাংলাদেশ কনসার্টের কথা এবং বব ডিলানের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, এই ছিল আমাদের সংস্কৃতির বিশেষ প্রেরণা। মুক্তিযুদ্ধে হ্যারিসনের কনসার্ট এবং বব ডিলানের ভূমিকা আজ স্বীকৃত। বব ডিলান আজ পেয়েছেন নোবেল পুরস্কার। উপাচার্য আরও বলেন, শিক্ষা এবং সহশিক্ষা মিলেই পূর্নাঙ্গ শিক্ষা হয়। সংগীত নৃত্য বা নাটক মানুষের মনকে ইতিবাচক চিন্তায় প্রভাবিত করে। শিক্ষার্থীদের নাটক, সংগীত ও নৃত্য বিষয়ে কর্মশালার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান, কর্মশালা-উত্তর শিল্পী নির্বাচন এবং কেন্দ্রীয়ভাবে “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক উৎসব” উদ্যাপন করা হবে। হলে হলে কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে দিতে হবে এবং তৈরি করতে হবে সংস্কৃতিমনস্ক পরিবেশ। আজকের সহিংস ও অসহিষ্ণু সামাজিক প্রেক্ষাপটে এই উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আক্তারী মমতাজ বলেন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি জ্ঞানভিত্তিক সৃজনশীল, ঐতিহ্য সচেতন ও সংস্কৃতিমনস্ক জাতি গঠনের লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে চলেছে। মন্ত্রণালয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথ উদ্যোগে সংস্কৃতি চর্চা বিকাশের প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে। সে লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের বাংলা সংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশের ধারায় সম্পৃক্ত করার ভাবনা থেকেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগ, সংগীত বিভাগ এবং নৃত্যকলা বিভাগের সক্রিয় সহযোগিতার পাশাপাশি শিল্পকলা একাডেমির প্রয়োজনীয় সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সংস্কৃতি চর্চা ও চেতনা বিকাশের এই উদ্যোগ সফল হবে। এর মাধ্যমে আবহমান কাল থেকে প্রবাহমান বাঙালি সংস্কৃতির উত্তরাধিকার ও নিজেদের আত্মপরিচয় নবীণ প্রজন্মকে চিনিয়ে দেয়া যাবে এবং মানবিক মূল্যবোধের উজ্জীবন ঘটবে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তব্য উপস্থাপন করেন অধ্যাপক রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, ড. মহসিনা আক্তার খানম এবং সুদীপ চক্রবর্তী। তাঁরা উৎসবের পূর্ববর্তী কর্মোদ্যোগ সম্পর্কে অবহিত করেন।
এই উৎসবের সিদ্ধান্তসমূহের মধ্যে রয়েছে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহে শিক্ষার্থীদের নাটক, সংগীত ও নৃত্য বিষয়ে কর্মশালা প্রদান; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহে কর্মশালায় সম্পৃক্ত শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে আগামী জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে মূল উৎসব শুরু হবে। ৩-দিনব্যাপী “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক উৎসব” ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল থেকে এর কার্যক্রম শুরু হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগ, ইনস্টিটিউট, হলসমূহে।
----------------
পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত)
জনসংযোগ দফতর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠেয় সাংস্কৃতিক উৎসব উপলক্ষে আজ ৪ নভেম্বর ২০১৬ শুক্রবার সকালে আবদুল মতিন চৌধুরী মাল্টিমিডিয়া কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উৎসব আয়োজনের প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আক্তারী মমতাজ। এতে আরও উপস্থিথ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, সংগীত বিভাগের চেয়ারপার্সন ড. মহসিনা আক্তার খানম, থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান সুদীপ চক্রবর্তী। (ছবি : ঢাবি জনসংযোগ)