একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরের সুন্দরবন সাব-সেক্টর কমান্ডার ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার অন্যতম সাক্ষী মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহমেদ-এর মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। 

২৮ জুলাই ২০১৭ শুক্রবার এক শোকবাণীতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মেজর জিয়াউদ্দিন আহমেদ জাতির একজন কৃতী ও শ্রেষ্ঠ সন্তান। তরুণ বয়স থেকেই তিনি রাজনীতি সম্পৃক্ত পরিবারের সদস্য হিসেবে গণসচেতন ছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধসহ গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে তাঁর অনবদ্য ভূমিকার জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

উপাচার্য মরহুমের রূহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাঁর পরিবারের শোক-সন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। 

মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউদ্দিন আহমেদ ১৯৫০ সালের ডিসেম্বরে পিরোজপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা আফতাব উদ্দিন আহমেদ পিরোজপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান ও মহকুমা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ১৯৬৭ সালে তিনি মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৮ সালে পিরোজপুর মহকুমা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদে যোগ দেন।  ১৯৭১ সালের ২০ মার্চ ছুটি নিয়ে লাহোর থেকে দেশে চলে আসেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি নবম সেক্টরের সুন্দরবন সাব-সেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত হন। সুন্দরবনে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি যুদ্ধে অংশ নেন জিয়াউদ্দিন। মুক্তিবাহিনীর জেড ফোর্সের অধীনে প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক হিসেবে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। বীরত্বের সঙ্গে সুন্দরবন অ লকে শত্রুমুক্ত রাখার জন্য তাকে সুন্দরবনের মুকুটহীন সম্রাট বলা হয়ে থাকে। সুন্দরবন রক্ষার জন্য সুন্দরবন বাঁচাও নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠনও গড়ে তুলেছিলেন তিনি। ১৯৮৯-৯১ সালে তিনি পিরোজপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ‘সুন্দরবন সমরে ও সুষমায়’ নামে একটি বই লিখেছেন মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহমেদ।

উল্লেখ্য, মেজর জিয়াউদ্দিন আহমেদ আজ ২৮ জুলাই ২০১৭ শুক্রবার ভোর চারটার দিকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃতুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। আগামীকাল শনিবার তাঁর মরদেহ দেশে আনা হবে।
------------------

পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত)
জনসংযোগ দফতর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়